Android (Root) কি, কেন আপনার এন্ড্রয়েড রুট করবেন এর সুবিধা ও অসুবিধা কি

বর্তমান সময়ে বেসিরভাগ মানুষই Android Smart Phone ব্যবহার করে, কিন্তু Root কথাটি একবারও শুনেনি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ!! কিন্তু নতুন অনেক Android ব্যবহারকারীই জানে না যে, আসলে Root এর প্রকৃত কি?
Android ডিভাইসটিতে বাড়তি পারফরম্যান্স পাবার জন্য Root করা হয় বলে অনেকেরই ধারনা। তাই অনেকে বাড়তি পারফরমেন্স পাবার জন্য Android Deviceটি Root করে থাকেন ।
কিন্তু Android ডিভাইসটি Root করার পর দেখা যায় তাদের ডিভাইসের পারফরম্যান্স আগের মতোই আছে বা আগের চেয়ে কমে গেছে। তখন তারা হতাশ হয়ে যায় এই ভেবে, তাহলে Android ডিভাইসটি Root করার সুবিধাগুলো আসলে কী??

(Root)রুট কি?

Root শব্দটির আভিধানিক অর্থ গাছের শিকড়। কিন্তু Androidএ Root বলতে বুঝায়, একটি Permission বা অনুমতি। Root হচ্ছে সেই Permission অথবা অনুমতি, যা Android ব্যবহারকারীকে সর্বাধিক ক্ষমতার অধিকারী করে তোলে।
রুট হচ্ছে অনুমতি, আর এই অনুমতি থাকলে ব্যবহারকারী সেই ডিভাইসে যা ইচ্ছে তাই করতে পারেন ।
উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে ব্যবহারকারী অ্যাডমিনিস্ট্রে টর প্রিভিলেজ ছাড়া সিস্টেম ফাইলগুলো নিয়ে কাজ করতে পারেন না (যেগুলো সাধারণত
সি ড্রাইভে থাকে)। লিনাক্সেও তেমনি রুট পারমিশন প্রাপ্ত
ইউজারছাড়া সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্রে শনের কাজগুলো করা যায় না।
আপনি ডিভাইসটি কিনেছেন ঠিকই, কিন্তু আপনি কিন্তু Operating System ইন্সটল করেননি, তাই না? ডিভাইস প্রস্তুতকারক ডিভাইসটি প্যাকেটজাত করার আগে তাদের কম্পিউটার থেকে লিনাক্স কার্নেলের উপর তৈরি Android Operating System ইন্সটল করে দিয়েছে। এখানে বলা প্রয়োজন যে, Android Operating System এর মূল ভিত্তিটা এক হলেও এক এক কোম্পানি এক একভাবে এটিকে সাজাতে বা কাস্টোমাইজ করতে পারেন। এই জন্যই Sonyএর একটি Android ডিভাইসের User Interfaceএর সঙ্গে Samsung এর একটি Android ডিভাইসের Interfaceএর মধ্যে খুবই কম মিল পাওয়া যায়।
আপনার ডিভাইস প্রস্তুতকারক কোম্পানি ইচ্ছে করেই তাদের ডিভাইসে রুট অ্যাক্সেস দেয়নি। এ কথা শুনে কোম্পানির উপর কিছুটা রাগ হতেই পারে। তবে কোম্পানি তাদের ডিভাইসের সুরক্ষার জন্যই এই কাজটি করে ।

কোনো ফোন কোম্পানিই রুট করা ডিভাইস বাজারে ছাড়ে না

ফোন প্রস্তুতকারকরা ইচ্ছে করেই তাদের ফোনগুলো Lock করে দিয়ে থাকে। Root ফোল্ডারে থাকা ফাইলগুলো অত্যন্ত
প্রয়োজনীয়। ভুলবশত এর কোন একটি মুছে গেলে আপনার ডিভাইস কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে।
তাছাড়া ভাইরাস বা ক্ষতিকারক প্রোগ্রাম অনেক সময় রুট করা ডিভাইসের ক্ষতি করতে পারে। তবে Lock থাকায় ব্যবহারকারী Root Access পান না, তাই অন্য প্রোগ্রামগুলোর রুট অ্যাক্সেস পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। ফোন Lock করে বাজারে ছাড়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে সিস্টেম অ্যাপ্লিকেশন ও ফাইল।
অনেকেই ইন্টারনাল মেমোরি খালি করার জন্য বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন এসডি কার্ডে ট্রান্সফার করে থাকেন। রুট করা থাকলে সিস্টেম অ্যাপ্লিকেশনগুলোও ট্রান্সফার করে ফেলা যায়। কিন্তু অপারেটিং সিস্টেমের কিছু ফাইল রয়েছে যেগুলো ইন্টারনাল মেমোরির ঠিক যেখানে আছে সেখানেই থাকা আবশ্যক। ব্যবহারকারী যখন ডিভাইস রুট করেন, তখন স্বভাবতই অনেক কিছু জেনে তারপর রুট করেন। তখন বলে দেয়াই থাকে যে, কিছু কিছু সিস্টেম অ্যাপস এসডি কার্ডে ট্রান্সফার করলে সমস্যা হতে পারে। কিন্তু যদি স্বাভাবিক অবস্থায়ই সেট রুট করা থাকে, তাহলে ব্যবহারকারী না জেনেই সেটের ক্ষতি করতে পারেন।
মনে করুন যার প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারনা কম আছে, সে যদি মনে করে যে, তার ফোনের ইন্টারনাল মেমোরির জায়গা ফাঁকা করবেন এবং সেই জন্য সে তার ফোনের রুট ফোল্ডারে গিয়ে সবগুলো ফাইল SDcard এ Move করে দিলেন। আগে থেকেই Root Access থাকার কারণে, ফাইলগুলো Move করার সময় ডিভাইসটি কোন বাধা দেবে না। তবে Move হবার মাঝেই ফোনটি বন্ধ হয়ে যাবে এবং আর ঠিকমতো কাজ করবে না। তখন তিনি কোম্পানির কাঁধে সব দোষ চাপাবেন। আর যদি রুট লক করা থাকে, ব্যবহারকারী রুট ফোল্ডার খুঁজেই পাবে না।
আশা করি এখন সবাই বুঝতে পেরেছেন, কেন Android ডিভাইসটিতে ফোন কোম্পানি Default Root Access করে দেয় না। তবে প্রায় ৯৫% ডিভাইসই রুট করা যায়।
বেশিরভাগ ক্রেতাই সাধারণ ক্রেতা হয়ে থাকেন যাদের ডিভাইস রুট করার কোনো প্রয়োজনই নেই।
তাই কোনো ফোন কোম্পানিই রুট করা ডিভাইস বাজারে ছাড়ে না
(Root)রুট করার সুবিধা ও অসুবিধা কি ? 

(Root)রুট করার সুবিধা

বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে মোবাইলের অব্যবহৃত ফাইল, টেমপোরারি ফাইল ইত্যাদি নিয়মিত মুছে ফোনের গতি ঠিক রাখা। এছাড়াও মোবাইলের পারফরমেন্স বাড়ানো যায় আরও অনেক ভাবে। ওভারক্লকিং করে সিপিইউ স্পিড স্বাভাবিক অবস্থায় যতটা থাকে তারচেয়ে বেশি দ্রুত কাজ করে। এর মাধ্যমে কোনো বিশেষ কাজে প্রসেসরের গতি বাড়ানোর প্রয়োজন পড়লে তা করা যায়। যখন মোবাইল এমনিতেই পড়ে থাকে, তখন সিপিইউ যেন অযথা কাজ না করে যে জন্য এর কাজের ক্ষমতা কমিয়ে আনা যায় আন্ডারক্লকিং করে। এতে করে ব্যাটারি ব্যাকআপ বাড়ানো সম্ভব। এছাড়াও রুট করে কাস্টম রম ইন্সটল করার সুবিধা রয়েছে। অনেক ডেভেলপার বিভিন্ন জনপ্রিয় মোবাইলের জন্য কাস্টম রম তৈরি করে থাকেন। এসব রম ইন্সটল করে আপনি আপনার মোবাইলকে সম্পূর্ণ নতুন একটি সেটের রূপ দিতে পারবেন।
আপনি সফটওয়্যার ব্যবহার করে আপনার রেম এর স্পীড বাড়াতে পারবেন , এর মাধ্যমে আপনি বড় বড় হাই কোয়ালিটি গেমস খেলতে পারবেন ।
প্রসেসরের স্পীড বাড়াতে পারবেন তবে কোন হার্ডওয়্যার বা অন্যান্য কোন কিছু বাড়াতে পারবেন না। আপনি ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরাকে ১৬ মেগাপিক্সেল করতে পারবেন না। যেই মোবাইলে NFC নেই তাতে তা সংযোগ করতে পারবেন না। রুট শুধু মাত্র আপনার অভ্যন্তরীণ পারফরম্যান্সে কাজে আসবে , বাহ্যিক কোন পরিবর্তন নয় ।

(Root)রুট করার অসুবিধা

সর্ব প্রথম মোবাইল রুট করার মাধ্যমে আপনার ওয়ারেন্টি বাতিল হয়ে যাবে। তাই রুট করার আগে সাবধান। অবশ্য অনেক মোবাইল আবার আনরুট করা যায়। আর মোবাইল আনরুট করা হলে তা সার্ভিস সেন্টারে থাকা টেকনিশিয়ানরা অনেক সময়ই ধরতে পারেন না যে সেটটি রুট করা হয়েছিল কি না। তবে কাস্টম রম থাকলে ধরা খাওয়া বাধ্যতামূলক।

বিদ্রতঃ

 যদি কিছু বলতে চাই তাহলে বলব যে কিছু করার আগে ভাল করে জেনে নেওয়া ভাল। রুট আপনি যদি ঠিক মত বুঝে নিতে পারেন তাহলে আপনার কাছে তা খুব এ সহজ আর যদি না পারেন তাহলে তা খুবই কঠিন … আশাকরি এখন, আপনারা সবাই(root)রুট সম্পর্কে বুঝতে পারছেন,
সর্বশেষ কথাঃ আমরা সবাই মানুষ তাই আমাদের ভুল হওয়াটাই স্বাভাবিক, তাই যদি কোনো ভুল করে থাকি তাহলে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন ।

Share this

Related Posts

Previous
Next Post »